আফিফ-মিরাজ পাল্টাল ইতিহাস, আশরাফুল ও মাশরাফির দীর্ঘদিনের রেকর্ড ভেঙ্গে চুরমার

দলীয় চল্লিশের আগেই সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন প্রথম পাঁচ ব্যাটার। জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্সে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক পেসারদের তোপে খাবি খাচ্ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।

সেখান থেকে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। এর পরে মাহমুদুল্লাহ আউট হলে মাঠে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

এরপর শুরু হয় বাংলাদেশের এগিয়ে চলা।এরপর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৬০ রানের পার্টনারশীপ গড়ে এই দুই ক্রিকেটার। সেই সাথে ভেঙ্গে দিয়েছে ৭ম জুটিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আশরাফুল ও মাশরাফির দ:আফ্রিকার মাটিতে গড়া ৫৪ রানের পার্টনারশীপের রেকর্ড।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৪৩.১ ওভার শেষে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৬২ রান। শুরু থেকেই ইতিবাচক ব্যাটিং করতে থাকা আফিফ ৬৬ ও মিরাজ ২৭ রানে অপরাজিত রয়েছেন।এর আগে পাওয়ার প্লে’র দশ ওভারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন প্রথম তিন ব্যাটার তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস।

পরে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মিডলঅর্ডারের দুই ব্যাটার ইয়াসির আলি রাব্বি এবং মুশফিকুর রহিম। কাগিসো রাবাদা একাই নিয়েছেন ৩ উইকেট।হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়েছেন তামিম ও সাকিব।

লুঙ্গি এনগিডির বলে তার গ্লাভসে লেগে বল চলে যায় কেশভ মহারাজের হাতে। টাইগার অধিনায়ক ৪ বল খেলে করেছেন ১ রান। পরে রাবাদার একই ধরনের ডেলিভারিতে ফ্লিক করে গিয়ে বাইরের কানায় লেগে সাজঘরে ফেরেন রানের খাতা খুলতে না পারা সাকিব।শুরু থেকেই এ দুজনের চেয়ে তুলনামূলক সাবলীল ছিলেন লিটন।

তিন চারের মারে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল তার ব্যাটে। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তিনি। রাবাদার ভেতরে ঢোকা বাউন্সারে ধরা পড়েন লিটন।ইনিংসের অষ্টম ওভারের প্রথম বলটিই খানিক টেনে খাটো লেন্থে করেন রাবাদা। হালকা সুইং করে ভেতরে ঢুকছিল সেই ডেলিভারি।

বলের লাইন থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেও বাঁচতে পারেননি লিটন। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে।একই ওভারে সাজঘরে ফিরতে পারতেন পাঁচ নম্বরে নামা ইয়াসির আলি রাব্বিও। তবে স্লিপে দাঁড়িয়ে তার সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন প্রথম স্লিপের ফিল্ডার জানেমান মালান।

রাব্বি বেঁচে গেলেও, বাঁচেননি লিটন। তিনি আউট হওয়ার আগে ২১ বলে করেছেন ১৫ রান।অবশ্য রাব্বিও বেশিক্ষণ বাঁচতে পারেননি। ইনিংসের ১২তম ওভারে টানা ষষ্ঠ ওভার করতে এসে শেষ বলে রাব্বিকে সাজঘরে পাঠান রাবাদা।

আগের ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি পেলেও, আজ মাত্র ২ রান করতে পেরেছেন রাব্বি। পরের ওভারে প্রায় পাঁচ বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা ওয়েইন পারনেলের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। তিনি ৩১ বল খেলে করতে পেরেছেন মাত্র ১২ রান।এরপর উইকেটে এসে শুরু থেকেই পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটার আফিফ।

রাবাদার করা ১৪তম ওভারে তিন বলের ব্যবধানে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। যা খানিক স্বস্তির বাতাস বইয়ে দেয় বাংলাদেশ ডাগআউটে।

পরে টেম্বা বাভুমার বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৭ ওভারে দলের পঞ্চাশ পূরণ করে দেন আফিফ।তরুণ সতীর্থের দেখাদেখি হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহও। প্রোটিয়া অধিনায়কের করা ২৩তম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। এ দুজনের ব্যাটে ভর করেই মূলত লড়াই করার মতো সংগ্রহের দিকে এগুচ্ছে বাংলাদেশ দল।