ওয়ান্ডার্সের উইকেটই ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। খটখটে শুকনো, বাড়তি আর অসমান বাউন্সি উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেমন খাবি খেয়েছেন,
তেমনই হেসেখেলে বোলিং-ব্যাটিং করে গেছেন প্রোটিয়ারা। মাত্র ১৯৪ রানের পুঁজি নিয়ে এমন উইকেটে জয়ের আশা করাটাই বৃথা। নিল ম্যাকেঞ্জি পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ে দায় দিয়েছেন উইকেটের।
এমন পেস স্বর্গে ১২.৪ ওভার এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা কাগিসো রাবাদা। শেষ ম্যাচেই নির্ধারিত হবে সিরিজ।ছোট টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক এবং জানেমান মালান।
যে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটাররা খেই হারিয়ে ফেললেন, সেই উইকেটেই তারা হেসেখেলে ব্যাট করছিলেন।অসুস্থতা কাটিয়ে সিরিজে প্রথমবার খেলতে নামা কুইন্টন ডি কক মাত্র ২৬ বলে ফিফটি তুলে নেন। ১৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে ৪০ বলে ২৬ করা জানেমান মালানকে বোল্ড করে ৮৬ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন মেহেদি মিরাজ।
ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা অপর ওপেনার ডি কককে থামান সাকিব। তবে ৪১ বলে ৬২ রান করা ডি কককে ফেরানোয় বড় অবদান ডিপ মিডউইকেটের সীমানায় অসাধারণ ক্যাচ নেওয়া আফিফের।কাইল ভেরেইনাকে নিয়ে আরও একটি জুটি জমিয়ে তোলেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।
জয় থেকে ১৯ রান দূরে থাকতে বাভুমাকে (৩৭) শরীফুলের তালুবন্দি করেন আফিফ হোসেন ভাঙে ৮২ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি। অন্যদিকে ৬২ বলে ফিফটি পূরণ করেন ভেরেইনা। শেষ পর্যন্ত ৫৮ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৭৬ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে জিতে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজে এলো ১-১ সমতা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ১৯৪ রান তোলে বাংলাদেশ। জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডার্স স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামার সিদ্ধান্তটা দ্রুতই ভুল প্রমাণ করে দেন দুই প্রোটিয়া পেসার লুঙ্গি এনগিডি এবং কাগিসো রাবাদা।উইকেটে আছে বাড়তি বাউন্স। এই সুযোগে বল হাতে ঝড় তুলতে শুরু করেন এই দুজন।
ফলে শুরু থেকেই বাংলাদেশ পড়ে বিপদে। দলীয় ৭ রানে লুঙ্গি এনগিডির বলে তামিম ইকবাল (১) আউট হয়ে যান।গত ম্যাচে ঝড়ো ব্যাটিং করা সাকিব আজ পারেননি। ৬ বলে কোনো রান না করেই রাবাদার শিকার হন। ভরসা হয়ে ছিলেন লিটন দাস (১৫)।
কিন্তু দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই ওপেনার আজ রাবাদার বলে বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে দেন।এরপর মুশফিকুর রহিম (১২) আর ইয়াসির আলী (২) দ্রুত আউট হয়ে গেলে মাত্র ৩৪ রানে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ!
এমন পরিস্থিতি থেকে হাল ধরার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ এবং আফিফ।দুজনের জুটি বেশ জমে ওঠে। ৮৭ বলে ৬০ রানের এই জুটি ভাঙে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে্। তাবারিজ শামসির শিকার হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ৪৪ বলে ২৫ রান। দারুণ খেলতে থাকা আফিফের সঙ্গী হন মিরাজ।২৮তম ওভারে দলের স্কোর তিন অংক স্পর্শ করে।
৭৯ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন আফিফ। ঘুরতে থাকে রানের চাকা। ব্যক্তিগত ২১ রানে ক্যাচ দিয়েও জীবন পান মিরাজ।১১২ বলে ৮৬ রানের চমৎকার এই জুটির অবসান ঘটে আফিফের বিদায়ে। দলীয় ১৮০ রানে রাবাদার করা ৪৬তম ওভারে টেম্বা বাভুমার তালুবন্দি হন ১০৭ বলে ৯ চারে ৭২ রান করা আফিফ।
একই ওভারে ফিরে যান মিরাজও। রাবাদাকে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন ৪৯ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ৩৮ রান করা এই অল-রাউন্ডার। এর দ্বারাই পাঁচ উইকেট পূরণ হয়ে যায় রাবাদার।শরীফুলকে (২) ফেরত পাঠান ভ্যান ডার ডুসেন। শেষদিকে তাসকিনের ৯* রানে ৫০ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১৯৪ রান। ৩৯ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন রাবাদা। বাকি চার উইকেট চার বোলার ভাগ করেছেন।