পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জানুয়ারি মাসের মধ্যভাগে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন। এর আগে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিফ মুনির সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যান।
দুটি সফরের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ফান্ড কালেকশন বা অর্থনৈতিক সাহায্য প্রার্থনা করা।পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন চরম ভঙ্গুর অবস্থায় পড়েছে।
জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে এসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় মাত্র ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দিয়ে তিন সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটানো যায় মাত্র।
অথচ ২০২৩ সালের প্রথম কোয়ার্টারে সুদসহ ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে প্রায় আট বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে এবং ঋণদাতারা যদি বেঁকে বসে,
তাহলে পাকিস্তানকে দেউলিয়া রাষ্ট্র ঘোষণা করা হতে পারে।সুতরাং মধ্যপ্রাচ্যের দুই ধনী দেশে পাকিস্তানের দুটি হাইপ্রফাইল সফরের উদ্দেশ্য পর্যবেক্ষকদের বুঝতে অসুবিধা হয় না।
কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ১৬ জানুয়ারিতে আল-আরাবিয়া সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন,
তা বম্বশেল বিস্ফোরণের মতো ভারত-পাকিস্তানের মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি আল-আরাবিয়ায় বলেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে তিন তিনটি যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা উপযুক্ত শিক্ষা পেয়েছি। যুদ্ধের মাধ্যমে কোনো লাভ এবং কোনো লক্ষ্যই অর্জিত হয়নি, বরং দারিদ্র্যের হার বেড়েছে এবং আমরা শুধু পিছিয়ে গেছি।’
১৯৪৭ সাল থেকে গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে কোনো সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য কখনো শোনা যায়নি। এর আগে অন্যান্য কারণ তো রয়েছেই, তার সঙ্গে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করায় পাকিস্তানের একজন প্রধানমন্ত্রীকে ফাঁসিতে ঝুলতে এবং অন্য দুজন প্রধানমন্ত্রীকে একাধিকবার মেয়াদ পূর্তির আগেই ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে। তা ছাড়া একাধিকবার যখনই পাকিস্তানের কোনো বেসামরিক সরকার ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পথে হাঁটতে চাইছে, তখনই পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই গোপনে ভারতের অভ্যন্তরে জঙ্গি সংগঠনের মাধ্যমে সন্ত্রাসী আক্রমণ চালিয়ে পেছন থেকে সব বানচাল করে দিয়েছে।
বিগত দিনের এসব ঘটনা জানা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ যখন উল্লিখিত মন্তব্য বিদেশের কোনো সংবাদমাধ্যমে বলেন, তখন সংগত কারণেই সেটি বম্বশেলের মতো বিস্ফোরণ ঘটায়।এ বক্তব্যের পর তিনটি প্রশ্নের এখন মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। প্রথমত, ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বর্তমান সময়ে যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে, তার সূত্রেই কি আমিরাতের পক্ষ থেকে পরামর্শ অথবা চাপে পড়ে শেহবাজ শরিফ এমন বক্তব্য দিতে বাধ্য হয়েছেন?
দ্বিতীয়ত, এই বক্তব্য কি শেহবাজ শরিফ সরকারের কিংবা এর পেছনে কি পাকিস্তানের সব ক্ষমতার মালিক সেনাবাহিনীর সম্মতি রয়েছে?তৃতীয়ত, এটি যদি সেনাবাহিনীর সম্মতি ব্যতিরেকে হয়ে থাকে, তাহলে আইএসআই কি আগের মতো এটিকে পেছন থেকে ছুরি মারার জন্য ভারতের অভ্যন্তরে লস্কর-ই-তৈয়বা অথবা জয়শ-ই-মুহম্মদের দ্বারা কোনো অঘটন ঘটাবে? তবে আশাবাদীরা বলতে চান, ৭৫ বছরের লিগ্যাসি থেকে পাকিস্তান যদি সত্যি বের হয়ে আসতে পারে, তাহলে সেটি শুধু ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নয়,
পুরো উপমহাদেশের জন্য অত্যন্ত সুখবর হবে। কিন্তু উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর আমরা তো নয়ই, পাকিস্তানের সুধীসমাজও জানে বলে মনে হয় না। শেহবাজ শরিফ আল-আরাবিয়ায় সাক্ষাত্কার দেওয়ার পর পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির যে কথা ও বক্তব্য, তাতে খুব যে আশার আলো দেখা যাচ্ছে, তা একদম নয়।এরই মধ্যে পাকিস্তান সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাসংবলিত সাংবিধানিক ধারা ৩৫০ ও ৩৫ক পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে শান্তি আলোচনা এগোবে না।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষাবিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যান মুশাহিদ হুসেন ভারতীয় সাংবাদিক করন থাপারের সঙ্গে দ্য ওয়ার চ্যানেলে এক সাক্ষাত্কারে প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন এবং ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের জন্য মূলত ভারতকেই দায়ী করেছেন।অন্যদিকে শেহবাজ শরিফের বক্তব্য নিয়ে ভারতের মিডিয়ায় হৈচৈ চললেও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে একরকম নীরবতাই পালন করা হয়েছে। তবে ভারতের কয়েকটি মিডিয়া এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন,
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কাশ্মীরসহ ভারতের অভ্যন্তরে জঙ্গি-সন্ত্রাসী লেলিয়ে দেওয়া বন্ধ না হলে শান্তিপ্রক্রিয়া এগোবে না। তবে যে পক্ষ থেকে যেটিই বলা হোক না কেন, এ রকম ভাবার কারণ নেই যে শেহবাজ শরিফ অপরিকল্পিতভাবে হঠাৎ করেই এমন বম্বশেলসম বক্তব্য দিয়েছেন। হতে পারে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে, যার সম্ভাবনা খুবই কম। আর দ্বিতীয় হতে পারে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের চাপে একটা ব্যাক চ্যানেলে ভারতের সঙ্গে শান্তি আলোচনার পথকে সুগম করার জন্য আল-আরাবিয়া মিডিয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এমন বক্তব্য দিয়েছেন।একসময় পাকিস্তানের বড় খুঁটি ছিল সৌদি আরবসহ আরববিশ্ব। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন। আরববিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্র সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসরের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। পাকিস্তানের ইসলাম রক্ষার স্লোগান এখন আর তেমন কাজে লাগছে না। সুতরাং ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক বিবেচনা আর জাতীয় স্বার্থ ও ভূ-রাজনীতির হিসাব-কিতাব একসঙ্গে যায় না।
আর পাকিস্তান ধর্মের নামে কত বড় অধর্মের কাজ করতে পারে তার উদাহরণ একাত্তর। তবে জাতীয় স্বার্থের জায়গা থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রকাশ্যে ও গোপনে যত চেষ্টা করেছে, উপমহাদেশের অন্য কোনো দেশের সঙ্গে ততটা চেষ্টা ভারত করেনি, যে কথা গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সাবেক উপপ্রধান বি রমন তাঁর লিখিত ‘দ্য কাউবয়েজ অব র’ গ্রন্থেও উল্লেখ করেছেন। একই কথা ‘আ লাইফ ইন দ্য শ্যাডো’ গ্রন্থে বলেছেন ‘র’-এর সাবেক প্রধান এ এস দৌলাত।পাকিস্তানের সুধীসমাজ ও জনগণের একটা অংশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সুফলটা উপলব্ধি করে। জুলফিকার আলী ভুট্টো থেকে শুরু করে বেনজির ভুট্টো, নওয়াজ শরিফ ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের আগ্রহ দেখিয়েছেন।
তবে এ ক্ষেত্রে ইমরান খানের অবস্থান ছিল ভিন্ন।সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ, যিনি ১৯৯৯ সালে সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় অটল বিহারি বাজপেয়ি ও নওয়াজ শরিফ কর্তৃক সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগকে বানচাল করার জন্য সরকারকে না জানিয়ে সেনাপ্রধান হিসেবে কারগিল যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়েছিলেন, সেই জেনারেল মোশাররফ ক্ষমতায় আসার পর দিল্লিতে ছুটে গেছেন। রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থেকে বা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যা করা ও বলা যায় সেটা এক বিষয় আর ক্ষমতায় আরোহণের পর কঠিন বাস্তবতাকে মোকাবেলা করা অন্য বিষয়। মোল্লা ও মিলিটারিতন্ত্র থেকে দেশকে মুক্ত করার একটা প্রচেষ্টা পাকিস্তানের খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবী ও সুধীসমাজ এখন করছে, এটা বোঝা যায়।
কিন্তু অতীত ও বর্তমান কোনোটাই আশার বাণী শোনাচ্ছে না। গেল বছরের শেষের দিকে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের এক অনুষ্ঠানে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।বরাবরের মতো ভারত আন্ত সীমান্তীয় সন্ত্রাসী ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে বক্তব্য দেওয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলওয়াল ভুট্টো অত্যন্ত অকূটনৈতিক ও অশোভন ভাষায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশ্যে দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হবে, তা মনে হয় না। ব্যাক চ্যানেলে একটা সংযোগ বজায় থাকলেও শান্তি আলোচনার আপাতত আলোর মুখ দেখার সম্ভাবনা যে কম তার আরেকটি কারণ দুই দেশই আগামী এক বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের সম্মুখীন হবে।পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে মোল্লা ও মিলিটারি পক্ষের শুভদৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সব রাজনৈতিক দলই প্রচণ্ড ভারতবিদ্বেষ ও লড়কে লেঙ্গে কাশ্মীর স্লোগানে বিভোর হয়ে যায়।
অভ্যন্তরীণ রাজনীতি অনেক পরিপক্ব হওয়ায় ভারতের বিষয়টি ভিন্ন। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার সম্প্রতি অভিযোগ তুলেছেন, ২০১৯ সালে ভারতের জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা দল সরকার কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী ঘটনার পরিপেক্ষিতে ভোটের রাজনীতিতে সুবিধা আদায়ের জন্য পাকিস্তানের বালাকোটে আকাশপথে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক অভিযান চালায়।অভিযোগ, পাল্টা-অভিযোগ তো আছেই, এর সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের পথে হিমালয়সম বাধা হয়ে আছে কাশ্মীর ইস্যু। আর দ্বিতীয়ত, সাতচল্লিশের দানবীয় সাম্প্রদায়িক চেতনার যে ভূত, তার কবল থেকে শুধু পাকিস্তান নয়, উপমহাদেশের কোনো দেশই মুক্ত হতে পারেনি, বরং ক্রমেই যেন সেটি আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপমহাদেশের শান্তি ও সহযোগিতার পথে এটিও এক বড় বাধা।তারপর বৈশ্বিক, ভূ-রাজনীতির প্রভাব তো রয়েছেই, সেখানে চীন-আমেরিকার দ্বন্দ্ব ও প্রতিযোগিতায় উপমহাদেশের রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান অনেক ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিরোধী হয়ে যাচ্ছে। তবে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান এবং এর সঙ্গে একাত্তরের গণহত্যা ও বাংলাদেশের প্রতি যে দায় রয়েছে,
সেটির মীমাংসায় যদি পাকিস্তান আগ্রহী হয়, তাহলে অন্যান্য সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে উপমহাদেশের শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রটি প্রসারিত হতে পারে। বাংলাদেশের সঙ্গে একাত্তরের দায়দেনা মেটাতে এ পর্যন্ত পাকিস্তান কোনো আগ্রহ দেখায়নি আর কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের পথটিও ক্রমেই যেন দূরে সরে যাচ্ছে।কাশ্মীর ইস্যুকে জিইয়ে রাখতে পারলে পাকিস্তানের মোল্লা ও মিলিটারি পক্ষ রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে রাখতে পারে। সুতরাং কাশ্মীর সমস্যার সমাধান তারা চাইবে না। সুতরাং আল-আরাবিয়া মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের যে বক্তব্য তার ভিন্ন কারণ রয়েছে বলে মনে হয়। তা না হলে শেহবাজ শরিফের বক্তব্য মিডিয়ায় আসার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে কাশ্মীরের জন্য ভারতীয় সংবিধানের ৩৫০ ধারা পুনর্বহালের দাবি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আসত না।ফেইট অ্যাকম্পলি (Fait accompli) বলে একটা কথা আছে। শুধু বিজেপি নয়, ভারতের কেন্দ্রে অন্য কোনো দল ক্ষমতায় এলেও কাশ্মীরের জন্য সংবিধানের ৩৫০ ধারা আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তারপর পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মীরের ওপর থেকে দিল্লির কোনো সরকার কি ভারতের দাবি ছেড়ে দিতে পারবে। খুবই কঠিন প্রশ্ন। সব দেশের রাজনৈতিক নেতাদের জন্য যে কথাটি সত্য, তা হলো ক্ষমতার বাইরে থাকলে যত উত্তেজনাকর বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়া যায়, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর জাতীয়, আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতায় সে রকমটি আর করা যায় না। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত কোনো নেতাই ফ্রি এজেন্ট থাকেন না।
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওয়াহেরলাল নেহরু ব্যক্তিগতভাবে চীনের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার প্রচণ্ড বিরোধী থাকা সত্ত্বেও ১৯৬২ সালের যুদ্ধ এড়াতে পারেননি। তবে পাকিস্তানের বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। ভারতের সঙ্গে সব কটি যুদ্ধই পাকিস্তান আগ বাড়িয়ে শুরু করেছে এবং সব কটি যুদ্ধেই পাকিস্তান শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে। লড়কে লেঙ্গে কাশ্মীর এবং হিন্দু ভারত মুসলমান পাকিস্তানের চিরশত্রু—এই দর্শন পাকিস্তানকে আজ কত বড় দুর্দশার মধ্যে ফেলেছে, সেটি প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের বক্তব্যের মাধ্যমেই ফুটে উঠেছে। তবে বাস্তবতা এমনই কঠিন যে দু-একটি বম্বশেলে বরফের পাহাড় গলবে বলে মনে হয় না।